তোমার আনন্দ যখন অন্য কারো দুঃখের কারণ
প্রিয় ছাত্র বন্ধুরা, অবশেষে শীত কাল আসছে , এটাই কিন্তু একটা ভালো লাগার অনেক বড় কারণ, তাইনা? বাকি সব কিছু বাদ দিলাম। উমম, একটা কথা বলতে চাই সবার জন্য, তা হলো - আনন্দে আমরা কে না থাকতে চাই তাইনা? আমাদের জীবনের সব কাজের উদ্দেশ্যই হচ্ছে যেন দিন শেষে একটু শান্তি তে থাকতে পারি।..তার জন্যেই তো এই কাজ.. লেখাপড়া .. পরিশ্রম।
এই আনন্দ টা পেতে যেয়ে কখনো কখনো আমরা বুঝতেই পারিনা কি ক্ষতি টা করে ফেললাম! এটা তো আমরা জানি যে সবাই এক রকম হয়না, তাইনা? আমাদের কথা বলার ধরণ, কাজ করার ধরণ, চলা ফেরার ধরণ বিভিন্ন রকম, যখন এই ধরণ গুলো অন্যের সাথে মিলে যায়, একটা বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, আর কিছু মানুষ একলা থেকে যায়, যে কারো সাথে নিজেকে মেলাতে পারেনা। হতে পারে তার বেক্তিত্ত এমন যেটা কেউ পছন্দ করছে না, অথবা তার কোনো একটা বেপার, তার জীবন ধারা তোমার কাছে গ্রহণযোগ্য না... এ পর্যন্ত সব ঠিক ছিল... তুমি তোমার বন্ধু দের নিয়ে চলো, গল্প করো... আড্ডাবাজি করো...সেটা ঠিক আছে, এটা ততক্ষন ই ঠিক আছে যতক্ষণ সেই আড্ডায় অনুপস্থিত তৃতীয় বেক্তির কোনো বিষয় না আসে যা শুনলে সে কষ্ট পাবে ..
যখন আমরা ওই দল ছাড়া মানুষ টা নিয়ে কথা বলি, তার উপস্থিতিতে তাকে নিয়ে হাসি, তাকে নিয়ে তামাশা করি, আমরা যে মানুষ হিসেবে নিজেকে কত নীচু ফেলি, সেটা হয়তো অনেকেই জানিনা। যে মানুষ টা একা থাকছে, বন্ধু ছাড়া থাকছে, যার কোনো শুভাকাঙ্খী নেই, তার আত্মবিশ্সাস এমনিতেই কিছু টা কম থাকছে, কারণ সে ভালো করেই জানে সে একটু আলাদা, তার কথার ধরণ আলাদা, তার পোশাক আলাদা, তার উচ্চারণ আলাদা। সে যে কত স্ট্রাগল করছে ভেতরে ভেতরে সেটা কিন্তু কেউই জানেনা। যখন তাকে নিয়ে বাকি রা হাসাহাসি করছে, ওই মুহূর্ত গুলো তে তার সেলফ কনফিডেন্স যে কত নিচে নেমে যাচ্ছে, সেটার খবর ও কেউ রাখে না! আমাদের সমাজ টাই এমন - যে ভিন্ন, যে আলাদা, যার কোনো সাপোর্ট গ্রুপ নেই, তার কোনো মূল্য নেই! আমরা মানুষ কে তার নিজস্ব অর্জিত গুণাবলী দিয়ে কম, তার গাড়ি, তার টাকা, তার পোশাক, তার ফেইসবুক এ পোস্ট করা ছবি দিয়ে তাকে জাজ করি! (লজ্জা!)
এই অবস্থায় যদি ওই দল ছাড়া মানুষ টা দেখে তার সামনেই তাকে নিয়ে বাকি রা হাসাহাসি করছে, তার কোনো কথায় বা কাজে বাকি রা বিনোদন পাচ্ছে, কোথায় যাবে সেই দল ছুট মানুষ টা? সে যখন বাড়ি ফিরবে, নিজেকে ফেস করবে, কেমন লাগবে তার? মানুষ সৃষ্টির সবচে উন্নত জীব, তার প্রমান কি পাচ্ছে সে? এসব কিছুর ফলে ধীরে ধীরে একটা নেগেটিভ এনার্জি তাকে কনসিউম করে...মানুষ থেকে ভালো কিছু পাওয়ার বিশ্বাস ও তার উঠে যায়, বেঁচে থাকা তা বিষাক্ত হয়ে ওঠে তার জন্যে। কোনো ক্ষেত্রে এই অবস্থা দীর্ঘতর হতে থাকলে, গুরুতর মানসিক সমস্যা দেখা দেয়. কি অবস্থা টাই না হয় তখন সেই পরিবার এ!
আমরা যেহেতু সুস্থ মানুষ, সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত বুদ্ধি বিবেক সব ই পেয়েছি, তাই এখন উচিত এগুলোর প্রমান দেওয়ার। শারীরিক সুস্থতাই যে আমাকে পরিণত মানুষ বানায় না, এটা বোঝার সময় এসেছে। পরিপূর্ণ সুস্থ আমি তখন ই হবো, যখন এরকম স্পেশাল কোনো মানুষ পেলে তার যত্ন নিবো, সে যে দল ছাড়া নিজেকে মনে করে , এটা তাকে বুঝতে দিবো না, যদি হাসতে হয় কোনো বেপারে, তাকে নিয়েই হাসবো, তার যে বেপার গুলো অড্ লাগে, সেটা তাকে শুধরাতে সাহায্য করবো।
আরো একটা কারণে করবো, কারণ ভেবে নিবো যদি ওই মানুষ টা আমার পরিবার এর সদস্য হতো, আমি তাকে নিয়ে হাসাহাসি করতে পারতাম? জাস্ট এই ভাবে ভাবলেই আমরা আমাদের চারপাশ টা কে আলোকিত করতে পারবো, কোনো ম্যাজিক এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে না, আমরা প্রত্যেকেই হয়ে উঠবো আলোকিত মশাল। আমরাই হয়ে উঠবো পরিবর্তন এর ডেফিনেশন। ..... পারবো তো?
..............................................
আবু মোঃ আব্দুল্লাহ
ভাল লাগল ভাই, চালিয়ে যান।
ReplyDelete